মহেশখালীর সংবাদকর্মীকে ইউএনওর অসৌজন্যমূলক আচরণে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড়

 প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২২, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন   |   মিডিয়া কর্নার

মহেশখালীর সংবাদকর্মীকে ইউএনওর অসৌজন্যমূলক আচরণে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড়



নুরুল করিম (মহেশখালী) : 

ঢাকা ও কক্সবাজার জেলা থেকে প্রকাশিত পত্রিকার মহেশখালী গণমাধ্যমের প্রতিনিধি'কে মহেশখালী উপজেলার ইউএনওর অসৌজন্যমূলক ও শুদ্ধাচার পরিপন্থী আচরণে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মহেশখালী কর্মরত সাংবাদিকগণ।


রবিবার (২৩ অক্টোবর) মহেশখালী প্রেস ক্লাবের সাবেক ভবন এলাকায় মহেশখালীর সব সাংবাদিক সংগঠন ও কর্মরত সাংবাদিক এর ব্যানারে সাংবাদিক সমাবেশে মিলিত হন মহেশখালীর সর্বস্তরের সাংবাদিকগণ। মহেশখালী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুব রোকন এর সভাপতিত্বে ও মহেশখালী উপজেলা প্রেস ক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক আ ন ম হাসান এর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন মহেশখালী প্রেস ক্লাব এর সভাপতি আবুল বশর পারভেজ ও দ্বিতীয় সমন্বয়ক ছিলেন মহেশখালী উপজেলা প্রেস ক্লাব এর সভাপতি জেড এইচ এম ইউনুচ। সমাবেশে মহেশখালী প্রেস ক্লাব ছাড়াও মহেশখালী উপজেলা প্রেস ক্লাব, কক্সবাজার উপকূলীয় সাংদিক ফোরাম, মহেশখালী রিপোর্টাস ইউনিটি, রিপোর্টাস ইউনিটি মহেশখালী, মহেশখালী অনলাইন প্রেস ক্লাব ঐক্যবদ্ধ ভাবে অংশগ্রহণ করে।


সাংবাদিক সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- সমকালের জয়নাল আবেদীন, নয়াদিগন্তে হারুনুর রশিদ, এম. ছালামত উল্লাহ, দৈনিক আজকের কক্সবাজার বার্তার এস এম রুবেল, সিরাজুল হক সিরাজ, আমার সময়ের গাজী আবু তাহের, মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, সৈয়দ মোস্তবা আলী, আমার নতন সময়ের জাহেদ সরওয়ার, মকছুদুর রহমান, আব্দুর রশিদ, ফারুক ইকবাল, এম রমজান আলী, গণকন্ঠের মিছবাহ উদ্দিন আরজু, দৈনিক দৈনন্দিনের এম বশির উল্লাহ, কাব্য সৌরভ, দৈনিক ইনানীর কায়সার হামিদ, ইশরাত মোহাম্মদ শাহজান, দৈনিক রূপালী সৈকত বদরুন্নেছা হ্যাপী, মোহাম্মদ তারেক, এরফার হোসেন, এ এম রহমান, রফিকুল ইসলাম সোহেল, কক্সবাজার সংবাদের সাইফুল ইসলাম আফ্রেদী, এশিয়ান টেলিভিশনের সাইফুল ইসলাম সাইফ, কক্সবাজার সংবাদের সুব্রত আপন, আরফাত হোসেন, দৈনিক আনন্দবাজার ও দৈনিক আপনকণ্ঠের ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান, আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার বাপ্পি, দৈনিক দেশবাংলা'র নুরুল করিম, নুরুল কাদের, নুরুল বশর, আবু বক্কর ছিদ্দিক, সেলিম উল্লাহ, মোহম্মদ হাসান, একে রিফাত, কায়সার হামিদ ও রুপান্তরের রকিয়ত উল্লাহ প্রমূখ।


দাবী গুলো হলো- ১. চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ইউএনওকে ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, ২. সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের যাবতীয় ইতিবাচক নিউজ বর্জন করা হবে, ৩. ২৫ অক্টোবর সর্বস্তরের সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের সমন্বয়ে মহেশখালী উপজেলা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে, ৪. ২৭ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা সদরে মানববন্ধনের পর জেলা প্রশাসকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।


এ নিয়ে চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছে মহেশখালীসহ কক্সবাজার জেলার সকল সাংবাদিক। এ ঘটনার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইউএনও ইয়াছিনকে নিয়ে নানা বিতর্কিত পোস্ট করছেন অনেকে। পরদিন এ অপ্রত্যাশিত আচরণের প্রতিবাদে ২৩ অক্টোবর দুপুরে উপজেলা সড়কে সমবেত হয় মহেশখালীর কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ। মহেশখালীর সাংবাদিকদের নিয়ে ইউএনওর এমন অপ্রত্যাশিত আচরণের প্রতি নিন্দা জানিয়েছেন উপজেলার সিনিয়র সাংবাদিকরা।


গত শনিবার (২২ অক্টোবর) বেলা ৩টায়। মহেশখালী উপজেলা হলরুমে লবণ চাষীদের সাথে উপজেলা প্রশাসন ও বিসিক মতবিনিময় অনুষ্ঠিত এতে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় এমপি, জেলা আ.লীগের নেতৃবৃন্দ ও বিসিকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। মতবিনিময় সভা শেষ তবে বাহিরে অপেক্ষারত আছে সাংবাদিকরা। কী হয়েছে হলরুমে? কেনো হয়েছে? এ যাবতীয় জিজ্ঞেসাসহ বিসিক কর্মকর্তার কাছে নানা তথ্য জানতে হঠাৎ ইউএনও বলেন হোয়াট ইজ সাংবাদিক? কেনো দাওয়াত দিতে হবে? দাওয়াত ছাড়া আসলে আসবে না আসলে নাই। এ বিব্রতকর অবস্থায় স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক অনেকটা অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখানে, সাংবাদিকদের অপমান করায় সেখানেই দুঃখ প্রকাশ করেন এমপি।


প্রসঙ্গতঃ ইউএনও মোহাম্মদ ইয়াছিনের পূর্বের কর্মস্থল খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে থাকা অবস্থায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আনায় এক দিন মজুর শ্রমিককে ঘটনা সাজিয়ে জেলে পুরে দেন এ ইউএনও। একই উপজেলায় যেখানে স্বাভাবিকভাবে সরকারি ঘর পাওয়া দুষ্কর সেখানে একই ব্যক্তির দুই স্ত্রীর দুজনকেই মুজিবর্ষের ঘর দিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে নিজ উদ্যোগে পূর্বের কর্মস্থল ত্যাগ করার সময় নাটকীয় মানববন্ধন করিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েন ইয়াছিন। মহেশখালীতে এসেও থেকে নেই তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ড। সর্বশেষ সাংবাদিকদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ আচরণ করার মাধ্যমে ফের বিতর্কিত হন তিনি।


এ ঘটনায় ইউএনও ইয়াছিন সাংবাদিকতা পেশা ও সাংবাদিকদের নিয়ে নানা আপত্তিজনক মন্তব্য করায় এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেন।

মিডিয়া কর্নার এর আরও খবর: